বাংলা চলচ্চিত্রের বয়স বহুদিন হলেও ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ দেয়া হচ্ছে ১৯৭৫ সাল থেকে। এটিই বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের একমাত্র রাষ্ট্রীয় ও সর্বোচ্চ চলচ্চিত্র পুরস্কার। চলচ্চিত্র শিল্পের বিকাশ ও উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন বিভাগে এই পুরস্কার দিয়ে থাকে।
প্রতি বছরই এই পুরস্কারের আসরে বর্ণাঢ্য কর্মসূচি, নৃত্য ও সঙ্গীতের আয়োজন। মধ্যে মধ্যে বিভিন্ন বিভাগে সেরাদের হাতে তুলে দেয়া পুরস্কার। এর আগে আজীবন সম্মাননা পুরস্কারটি দেয়া হতো না। ২০০৯ সালে এটি প্রথম চালু করা হয়।
পুরস্কার হিসেবে আঠার ক্যারেট মানের পনের গ্রাম স্বর্ণের একটি পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেয়া হয়। আজীবন সম্মাননাপ্রাপ্তকে দেয়া হয় এক লাখ টাকা। শ্রেষ্ঠ পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রযোজক ও শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রযোজককে দেয়া হয় ৫০ হাজার টাকা করে। এছাড়া শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রযোজক, শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালককে ৫০ হাজার টাকা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে ত্রিশ হাজার টাকা করে দেয়া হয়।
কিন্তু বিভিন্ন বছরে বিভিন্ন কারণে এই সম্মানজনক পুরস্কারটি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের কয়েকজন খ্যাতিমান অভিনয়শিল্পী। ১৯৭৭ সালে তখনকার সুপারহিট নায়িকা শাবানার মাধ্যমে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার গ্রহণ না করার প্রচলন শুরু হয়েছিল। ‘জননী’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রীর জন্য নির্বাচন করা হয়েছিল তাকে। কিন্তু সে পুরস্কার শাবানা গ্রহণ করেননি।
১৯৮২ সালে ‘বড় ভালো লোক ছিল’ ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতার পুরস্কার পেলেও তা গ্রহণ করেননি সৈয়দ শামসুল হক। সুবর্ণা মুস্তাফা ১৯৮৩ সালে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রীর জন্য পুরস্কার পেয়েছিলেন। ‘নতুন বউ’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য তাকে এ পুরস্কার দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সুবর্ণা সেটা গ্রহণ করেননি।
১৯৯০ সালে মেয়ে সুবর্ণা মুস্তফার দেখানো পথে হেটেছিলেন তার বাবা খ্যাতিমান অভিনেতা গোলাম মুস্তফাও। সে বছর ‘ছুটির ফাঁদে’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতার পুরস্কার দেয়া হলেছিল এই গুণি অভিনেতাকে। কিন্তু পুরস্কারটি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তিনিও।
চলতি বছরেও ঘটতে পারে এমন একটি ঘটনা। গত এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশ তথ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৬’-এর বিজয়ীদের তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়। সেখানে ২০১৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘নিয়তি’ ছবির জন্য সেরা নৃত্য পরিচালক হিসেবে হাবিবের নাম উঠে আসে।
হাবিব সে সময়ই দাবি করেন, এটা নাকি জালিয়াতী। ‘নিয়তি’ ছবিতে তিনি কাজই করেননি। কাজেই তার পক্ষে এই পুরস্কার গ্রহণ করা সম্ভব নয়। বিষয়টি নিয়ে সে সময় অনেক সমালোচনা ও অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু কোনো সঠিক সমাধান হয়নি।

ঢাকাটাইমস

Found this article interesting? Follow Techtribune24 on Facebook, Twitter and LinkedIn to read more exclusive content we post.