বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর নবীন ক্যাডেটদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা যুদ্ধে বিজয় অর্জনকারী একটি দেশ, একটি জাতি। সবসময় সে কথা মাথায় রেখে, মনে সাহস রেখে মাথা উঁচু করে বিশ্ব দরবারে চলতে হবে এবং নিজেদেরকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে হবে।‘

রোববার (২০ ডিসেম্বর) সকাল গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে রাষ্ট্রপতির কুচকাওয়াজ (শীতকালীন) অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে বিমান বাহিনী একাডেমি যশোর প্রান্ত যুক্ত ছিল।

তাদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের নবীন কর্মকর্তারা তোমরাই হবে সেই কর্ণদ্বার, তোমরাই আমার ২০৪১ এর সৈনিক। সেইভাবে নিজেদের গড়ে তুলবে, দেশকে ভালোবাসবে, মানুষকে ভালোবাসবে, দেশ ও মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধ, কর্তব্যবোধ থাকবে। জাতির পিতার আর্দশ নিয়ে তোমরা এগিয়ে যাবে। ইনশাল্লাহ আমরা আর পিছিয়ে থাকবো না।’

কোনোকিছুতেই যেন বাংলাদেশ পিছিয়ে না থাকে, তার জন্য যা যা দরকার সেটা করে যাচ্ছি বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘খুব দুঃখিত করোনা মহামারির কারণে আমার যাতায়াত খুব সীমিত। যে কারণে সশরীরে উপস্থিত থাকতে পারলাম না। এটা আমার জন্য খুব দুঃখের, কষ্টের। আশাকরি এই ধরনের করোনা দুর্ভোগ থেকে বাংলাদেশ অচিরেই মুক্তি পাবে। ভবিষ্যতে আবার সশরীরে উপস্থিত থাকতে পারব।’

সরকারের একটি আধুনিক সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলার নানা প্রচেষ্টা তার বক্তব্যে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। এর অংশ হিসেবে বিমান বাহিনীকে যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তি ভিত্তিক ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণার ধারাবাহিকতায় প্রযুক্তিভিত্তিক বিমান বাহিনী গড়ে তোলার দিকে আমরা বিশেষ দৃষ্টি দেই। সেই সময়ে সর্বাধুনিক মিগ-২৯ বিমান ক্রয় করি। পাশাপাশি আধুনিক উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বিমান, হেলিকপ্টার, র‌্যাডার, ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র এবং মুখ্য যন্ত্রপাতি সংযোজন করেছি। অ্যারোনটিক্যাল সেন্টার গড়ে তুলি। তেঁজগাও বিমানবন্দর বিমান বাহিনীকে উপহার দেই, যাতে বিমান বাহিনী তাদের প্রশিক্ষণ আরও দৃঢ় করতে পারে এবং এগিয়ে যেতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিমান বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য অত্যাধুনিক পাঁচটি সি-১৩০জে পরিবহন বিমান ক্রয়ের জন্য চুক্তি সম্পাদন করা হয়েছে। যার তিনটি বিমান ইতোমধ্যে দেশে এসে পৌঁছেছে। বৈমানিকদের উন্নততর প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে আরও ৭টি অত্যাধুনিক কে-৮ ডব্লিউ জেট ট্রেইনার বিমান সংযোজন করা হয়েছে এবং অচিরেই যুক্ত হতে যাচ্ছে পিটি-৬ সিমুলেটর। এছাড়াও শিগগিরই যুক্ত হবে এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ইন্টিগ্রেশন, আনম্যান্ড এরিয়াল ভেহিকেল সিস্টেম, মোবাইল গ্যাপ ফিলার র‌্যাডার এবং সর্বাধুনিক এয়ার ডিফেন্স র‌্যাডার। ফোর্সেস গোল-২০৩০ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিমান বাহিনীকে উন্নত ও আধুনিকায়নে ভবিষ্যতে আরও আধুনিক উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন যুদ্ধবিমান ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি ক্রয়ের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে।

শেখ হাসিনা বলেন, লালমনিরহাটে প্রতিষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ে বিমান চলাচল, বিমান নির্মাণ ও মহাকাশ বিজ্ঞানচর্চা হবে। যার মাধ্যমে একদিন এই বাংলাদেশে যুদ্ধবিমান, পরিবহন বিমান ও হেলিকপ্টার তৈরি করতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। তাছাড়া মহাকাশে বিজ্ঞান চর্চা করা এবং একদিন আমরা মহাকাশে পৌঁছেও যাওয়ার প্রচেষ্টাও সরকার করে যাবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।


Found this article interesting? Follow Techtribune24 on Facebook, Twitter and LinkedIn to read more exclusive content we post.