আলতা বানু। বয়স ৭০ বছর। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার মসজিদ পাড়ার বাসিন্দা ছিলেন। তার বিবাহিত জীবনে নিজের কোনো সন্তান নেই। স্বামী কতদিন আগে মারা গেছেন তা-ও বলতে চান না ক্ষোভে। কবে প্রায় ছয় বছর ধরে বৃদ্ধাশ্রমে রয়েছেন।

আলতা বানু জানান, স্বামী মারা যাওয়ার পর যা সম্পদ ছিল সবটুকু পালিত ছেলেকে লিখে দেন। এরপর থেকে পালিত ছেলে আর তার খোঁজখবর রাখেননি। ফলে বাধ্য হয়ে আসতে হয় বৃদ্ধাশ্রমে।

জহুরা বেগম (৭৫) নামের আরেক বৃদ্ধা জানালেন, তিনি পাঁচ বছর ধরে মহানন্দা প্রবীণ নিবাস বৃদ্ধাশ্রমে রয়েছেন। স্বামী ও ঘর-সংসার সবই ছিল তার। কিন্তু স্বামী এবং ছেলেদের অত্যাচারে তিনি বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হন। স্বামী মারা যান দেড় বছর আগে। তারপরে ছেলেরা তার খোঁজ রাখেননি। শুধুমাত্র এক মেয়ে মাঝেমধ্যে এসে খবর নিয়ে যান।

তিনি অঝোরে কেঁদে কেঁদে বলেন, ‘ছেলেরা যদি আমাকে বাড়িতে নিয়ে যায়, তবে আমি রোজার ঈদ তাদের সঙ্গে করতে চাই। তবে কেউ নিতে যায় না। বছরের পর বছর আশায় থাকি হয়তোবা কোনো সন্তান এসে নিয়ে যাবে। কিন্তু কেউ আসে না। তবে এখানে যারা দেখাশোনা করেন সবাই আন্তরিক।’

একই কথা শোনান স্বামীহারা আসমা (৬৫)। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে ছিল। ছেলে মারা গেছেন অনেক আগে। আর মেয়ের বিয়ে হয় অন্যত্র। সে ঘরের নাতনি এসে তাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে যান দেড় বছর আগে। তখন থেকে তিনি এখানেই রয়েছেন।

সুফিয়া (৭০) নামের এক বৃদ্ধা জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেহায়চর তার বাড়ি ছিল। সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মারা যাওয়ার কিছু দিন পরেই মারা যান তার স্বামী। এরপর হতেই তিনি ভাইদের বাড়িতেই থাকছিলেন। কিন্তু তার যেটুকু সম্পদ ছিল তার ভাইয়েরা লিখে নেয়ার পর রেখে গেছেন বৃদ্ধাশ্রমে।


Found this article interesting? Follow Techtribune24 on Facebook, Twitter and LinkedIn to read more exclusive content we post.