বেঁচে থাকার জন্য প্রতিটি মানুষকে জীবিকার সন্ধান করতে হয়। তাই মানুষ কর্মব্যস্ত থাকে। সারাদিনের ব্যস্ততা,উপার্জন,খাওয়া- পরা মানুষের বাইরের রূপ। সারাদিনের কর্মক্লান্তির পর মানুষ যখন বাসায় ফিরে তখন তার মনোজগতের চাহিদা জাগ্রত হয়ে উঠে। একটু মানসিক শান্তির জন্য প্রিয়জনের সান্নিধ্য কামনা করে। এটা মানুষের জৈবিক চাহিদা।

এই চাহিদার নিবৃত্তি সমাজে বৈধ- অবৈধ দুই উপায়েই হচ্ছে। অবৈধ সম্পর্ক গড়ে উঠে তিনটি কারণে। এক / ধর্মীয় মূল্যবোধের অভাবে দুই/ জৈবিক চাহিদার প্রয়োজনে তিন/ অর্থোপার্জনের নেশায়। মেয়েরা নিজের অবস্থা ভুলে ক্ষমতাধর কোটিপতির প্রেমে পড়ে। বদলে যায় তার লাইফস্টাইল। দুচোখে লাগে নেশার ঘোর। আনন্দের জোয়ারে ভাসতে থাকে।

ছুটতে থাকে অর্থের পেছনে। খুব সহজে যে সুখ- আনন্দ আসে, তার পেছনে ক্রিয়াশীল থাকে বিষাদ। এই বোধ যতদিন মেয়েদের মনে না জন্মাবে ততদিন ভালোবাসার নামে যৌনাচার চলতেই থাকবে। এমনকি আত্মহত্যার মাধ্যমেই সম্পর্কের সমাপ্তি ঘটতে পারে।

অসম সম্পর্ক কখনো নারীর মর্যাদা দিতে পারে না। পুরুষের ভোগের খেলনা ছাড়া কিছুই নয় সে। মেয়ে মধ্যবিত্ত ঘরের,তার উচ্চশিক্ষা নেই,পদমর্যাদা নেই। শুধু রূপকে পুঁজি করে পুরুষকে দেহখানি সঁপে দেয়। একবারও ভাবে না সে কতটা ছোট,হেয়,অসম্মানিত। ক্ষমতাধর,কোটিপতির যৌনালীলার সামগ্রী সে।

তার স্বল্পজ্ঞান,আবেগ,অপরিসীম বিশ্বাস আর ভালোবাসা তাকে মৃত্যু ছাড়া কী দিতে পারে? তার না আছে অর্থ, না আছে শিক্ষা, না আছে সামাজিক মর্যাদা। কোন ভরসায়,কোন বিশ্বাসে ভয়ংকর পথে পা বাড়ায়? অতিমাত্রায় লোভ বিনাশের পথ তৈরি করে। বিনাশের পথে নারীর যাত্রাই অধিক। কজন পুরুষকে আত্মহত্যা করতে শোনা যায়? কজন পুরুষই নারী কর্তৃক যৌনপীড়নের শিকার?

পত্রিকার পাতা,টিভি চ্যানেলে চোখ রাখলেই দেখা যায় নারী ধর্ষণ, নারীপাচার,নির্যাতন,খুন। কেন নারী লাঞ্ছিত হয়? ধর্ষিত হয়? কেন খুন হয়? কেন সে আত্মহননের পথ বেছে নেয়? কারণ পুরুষের ন্যায় সক্ষমতা তার নেই। পুরুষের সমকক্ষ সে হতে পারেনি।

সমাজের ক্ষমতাধর,বিত্তবান পুরুষ নারীর দেহকে অর্থমূল্যে ভোগ করে। ভালোবাসা সেখানে শূণ্য। অথচ দেহসুখবিলাসী নারী অর্থপ্রাপ্তির নেশায় বিভোর। অর্থ,বিত্তে,শিক্ষায়,পদমর্যাদায় যতদিন নারী সমাজের বিশিষ্ট কেউ না হয়ে উঠবে ততদিন সে সমাজে নিরাপদ নয়। তার বিচরণের ক্ষেত্র ও অবাধ হবে না।

বিভিন্ন শহর ও রাজধানীতে অবৈধ সম্পর্কের অবাধ বিস্তার রয়েছে। যেকোনো বয়সের মেয়েকে নিয়ে ধনীকশ্রেণির পুরুষদের এ লীলাখেলা চলছে। অবুঝ মেয়ে জানে না ভালোবাসার মুখোশের আড়ালে মৃ’ত্যুর নৃত্য উৎসব কতটা উপহাসের! সে জানে না তাকে ভোগশেষে ছুঁড়ে ফেললে প্রতিবাদের ভাষা,অর্থ,ক্ষমতা কিছুই তার নেই। এই অবুঝ মেয়েদের বাঁচাতে সমাজের কি কোনো দায় নেই?

পার্ক,হোটেল যেন আইনি চোখের বাইরে রয়েছে। কঠোরভাবে তা নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। আজকাল বাসাও নিরাপদ আশ্রয় নয়। বাসার মালিকদের উচিত ভাড়া দেওয়ার সময় সম্পর্কের ধরন, নাম ঠিকানা,কাবিননামা জেনে নেওয়া। এতটুকু নৈতিকতা না থাকলে দেশে অরাজকতা দেখা দেবে।

অবৈধ সম্পর্ক সমাজবিবর্জিত। যে সম্পর্কের সামাজিক বৈধতা নেই, সেই সম্পর্ক ঝুঁকিপূর্ণ। যা সমাজ মানে না তা গোপনে করতে যাওয়া পাপকাজে লিপ্ত হওয়া এবং ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা। তাই বলি, নারী তুমি আগে নিজেকে প্রস্তুত করো। পুরুষের প্রতি আবেগ,ভালোবাসা

দেখানো নিজস্ব দুর্বলতা। পুরুষের প্রতি এই দুর্বলতা দেখানো সর্বনাশের পথ খুলে দেওয়া। তাই নারীকে প্রজ্ঞাবান হতে হবে। সূক্ষ্মবুদ্ধি,গভীর চিত্তের অধিকারী হতে হবে। তাহলে একদিন পুরুষই নারীর অধীন হবে,আনুগত্য,বশ্যতা স্বীকার করবে।

লেখক: প্রভাষক, পাঁচকান্দি ডিগ্রি কলেজ
মনোহরদী,নরসিংদী।


Found this article interesting? Follow Techtribune24 on Facebook, Twitter and LinkedIn to read more exclusive content we post.