রাজধানীর গুলশানের ফ্ল্যাটে র’হস্যজনক মৃ’ত্যু হয় কুমিল্লার মে’য়ে মোসারাত জাহান মুনিয়ার। বসুন্ধ’রা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভিনের প্রে’মিকা ছিলেন মুনিয়া। আত্মহ’ত্যার প্র’রোচনার অ’ভিযোগে মা’মলার আ’সামি করা হয় বসুন্ধ’রার এমডিকে।

নি’হত মুনিয়ার বড় চাচা চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী মো. শাহদাত হোসেন সেলিম দাবি করেছেন, আমা’র ভাতিজি নুসরাত জাহান ও তার স্বামী মেঘনা ব্যাংকের কর্মক’র্তা মিজানুর রহমান সানির অ’তি লো’ভের বলি হয়েছে মুনিয়া। তারা মুনিয়াকে তাদের স্বার্থে ব্যবহার করেছে। আমাদের সঙ্গেও মিশতে দিত না। কুমিল্লা সদর দক্ষিণের জাঙ্গালিয়া দৈয়ারা গ্রামের ছে’লে মিজানকে ‘অসভ্য’ অ’ভিহিত করে মুনিয়ার চাচা সেলিম বলেন, ‘পরিবারের অমতে নুসরাত বিয়ে করে মিজানকে। এরপর সে আমা’র ছোট ভাতিজি মুনিয়াকে দিয়ে ধন-সম্পদ অর্জনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করে। যার পরিণতিতে আজ মুনিয়ার করুণ মৃ’ত্যু হয়েছে।’

নি’হত মুনিয়ার স্থায়ী ঠিকানা কুমিল্লার কোতোয়ালি থা’নার মনোহরপুর এলাকার উজির দীঘির দক্ষিণপাড়ে।

জানা গেছে, মুনিয়া নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় কুমিল্লা শহরের ৬নং ওয়ার্ডের শুভপুর এলাকার নিলয় নামে এক যুবকের সঙ্গে চলে যায়। নিলয় বিবাহিত, দুই সন্তানের জনক। কিন্তু মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান বাদী হয়ে কুমিল্লা কোতোয়ালি থা’নায় নিলয়কে আ’সামি করে নারী ও শি’শু নি’র্যাতন দমন আইনে মা’মলা করেন। ঘটনাটি ২০১৪ সালের। ওই সময় মুনিয়ার মা-বাবা জীবিত ছিলেন।

ওই মা’মলায় বলা হয়, ‘আমা’র অ’প্রাপ্ত বয়স্ক বোনকে ফুসলিয়ে অ’পহ’রণ করে অ’জ্ঞাত স্থানে নিয়ে তার সম্ভ্রম লুটসহ জানমালের ভ’য়াবহ ক্ষতির শ’ঙ্কা করছি। অবিলম্বে নিলয়কে গ্রে’প্তারপূর্বক মুনিয়াকে উ’দ্ধারকল্পে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানাচ্ছি। ওই মা’মলার সাড়ে তিন মাস পরে কুমিল্লার কোতোয়াাল থা’না পু’লিশ ফেনীতে নিলয়ের এক আত্মীয় বাড়িতে অ’ভিযান চালিয়ে উ’দ্ধার করে আনে মুনিয়াকে। পরে স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় গ্রাম্য বৈঠকে মোটা অঙ্কের জ’রিমানা আদায়ের মাধ্যমে নিলয়-মুনিয়ার বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটানো হয় এবং যে যার পরিবারে ফিরে যায়। এরপর নুসরাত ঢাকায় পাঠিয়ে দেন মুনিয়াকে।

মুনিয়ার বড় ভাই আশিকুর রহমান সবুজ এই প্রতিবেদককে বলেন, মুনিয়া ঢাকায় এসে একটি নারী হোস্টেলে থাকত।

মুনিয়ার একাধিক আত্মীয় বলেন, এ সময় তার বড় বোন নুসরাতের উৎসাহে ও জনৈক হিরু মিয়ার মাধ্যমে শোবিজ জগতে যাতায়াত শুরু হয় মুনিয়ার। তার সঙ্গে পরিচয় হয় সিনেমা’র একজন পরিচিত নায়কের। এছাড়া একজন পরিচালক তাকে নায়িকা বানানোর স্বপ্ন দেখিয়ে ঢাকার বিভিন্ন ক্লাবে নিয়ে যান।

তবে মুনিয়ার ভাই সবুজ দাবি করেন, শুরু থেকেই এসব অ’পছন্দ করতেন তিনি। কুমিল্লায় একটি আয়ুর্বেদিক কোম্পানিতে সেলসম্যানের চাকরি করা সবুজ জানতেন না মুনিয়া কোথায় থাকে, কী’’ করে। এমনকি তার মৃ’ত্যুর খবরও শুরুতে সবুজকে দেওয়া হয়নি বলে দাবি করেন তিনি। তিনি জানতে পারেন পরিচিতজনের মাধ্যমে। পরে তিনি নুসরাতকে ফোন দেন বিস্তারিত জানার জন্য। সবুজ বলেন, ওই সময়ও নুসরাত অনেক তথ্যই গো’পন করে আমা’র কাছে।

সবুজ বলেন, ‘আমাদের পৈতৃক সম্পত্তির সমান ভাগ নিয়ে নুসরাত আমি, আমা’র চাচা, চাচিসহ কয়েকজনকে আ’সামি করে মা’মলা করে। মা’মলার কারণে স্বাভাবিকভাবেই নুসরাত ও মুনিয়ার সঙ্গে আমা’র দূরত্ব তৈরি হয়। ওই মা’মলা এখনো শেষ হয়নি। তবে সমাধানের চেষ্টা চলছে।’ মুনিয়া নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় শুভপুরের নিলয় নামে এক যুবকের সঙ্গে পালানোর বিষয়ে জানতে চাইলে সবুজ বলেন, ‘তখন মুনিয়ার বয়স ছিল কম। সে আবেগে পড়ে ভুল করেছে। আম’রা পরে সামাজিকভাবে সেটার সমাধান করেছি।’

সবুজ জানান, তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইস’লাম মা’রা যান ২০১৫ সালে আর মা মা’রা যান ২০১৯ সালে। এরপর থেকে মুনিয়া সম্পূর্ণভাবে নুসরাত ও তার স্বামীর নিয়ন্ত্রণে ছিল। ছোট বোনের এ পরিণতির জন্য সবুজ নিজেও তার বোন নুসরাত ও তার স্বামীকে দায়ী করেন। সুবজ বলেন, ‘সেলিম চাচা আমাদের পরিবারের অ’ভিভাবক। ছোট চাচা সাজ্জাদ অ’সুস্থ। আম’রা যা করার সেলিম চাচার পরাম’র্শেই করবো।’


Found this article interesting? Follow Techtribune24 on Facebook, Twitter and LinkedIn to read more exclusive content we post.